দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী | টিকিটমূল্য | স্টপেজ | সুবিধাসমূহ
যারা নিয়মিত কিংবা অনিয়মিত ঢাকা টু পঞ্চগড় ও পঞ্চগড় টু ঢাকা যাতায়াত করে থাকেন মূলত তাদের জন্যেই আমাদের আজকের আর্টিকেল। যদি সময় এবং টিকিটমূল্য অনুযায়ী ব্যাটে-বলে মিলে যায় তবে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন হতে পারে আপনার এই ঢাকা টু পঞ্চগড় ও পঞ্চগড় টু ঢাকা যাতায়াতের সঙ্গী। এছাড়াও মাঝেমধ্যে যারা ট্রেন জার্নি করতে পছন্দ করেন কিংবা করে থাকেন তারা এই দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটিকেও পছন্দের ট্রেনের লিষ্টে ফেলতে পারেন।
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী – Drutojan Express Train Schedule
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন পরিচিতি
চলুন দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী এবং এর অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করার আগে আমরা জেনে নিবো দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন এর পরিচিতি সম্পর্কে।
মূলত দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনটি হলো বাংলাদেশের ৭৫৭/৭৫৮ নং ট্রেন। যা বর্তমানে বাংলাদেশী আন্তঃনগর ট্রেন হিসেবে সেবা দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংস্থার সরকারি এই ট্রেনটির যাতায়াত পথ হলো প্রায় ৫২৬ কিলোমিটার বা ৩২৭ মাইলের মতো। যা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় একেবারে পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনে এসে।
দ্রুতযান এক্সপ্রেস নামক বাংলাদেশের এই ট্রেনটি কিন্তু নিয়মিত সার্ভিস দিয়ে থাকে। এটি পরিষেবার হারের উপর দৈনিক হিসাবে সেবা দিয়ে থাকে। এসি, নন-এসি এবং শোভন…মূলত ৩ টি ক্যাটাগরিতে ট্রেনটির আসন ভাগ করা হয়েছে। সুযোগ-সুবিধা অনুযায়ী এসব আসনের ভাড়া কমবেশি হতে পারে।
ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সক্ষম আমাদের আজকের আলোচিত এই দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন। শুধু তাই নয়! বাংলাদেশের দ্রুত ও বিলাসবহুল ট্রেন হিসেবে একেবারে শুরুর কাতারে ফেলা যায় ট্রেনটিকে। যা মোট ১২ টি হাই কোয়ালিটির বগি নিয়ে সার্ভিস দিয়ে আসছে।
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের ইতিহাস
আর্টিকেলের এই অংশের ব্যাপারে শুরুতে বলবো, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের ইতিহাস খুব একটা বড় নয়! মূলত এই ট্রেনটি তার কর্মযাত্রা শুরু করে ৭ জানুয়ারি ২০১৮ সালে৷ অর্থ্যাৎ আজ থেকে মাত্র ৪ বছর আগে ট্রেনটির যাত্রা শুরু হয়। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে বয়সের দিক দিয়ে খুব একটা বয়স্ক নয় এই ট্রেনটি!
ট্রেনটির কার্যক্রম হিসেবে শুরুতে এটি কেবল দিনাজপুর থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনেই চলাচল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিলো এবং সে অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিলো। তবে পরবর্তীতে এর যাত্রাপথ আরো দীর্ঘ করবার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সে-সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বর্তমানে ট্রেনটি যাত্রীদের ঢাকা টু পঞ্চগড় ও পঞ্চগড় টু ঢাকা যাতায়াত করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকেশন
মূলত দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকেশনের ব্যাপারে যদি কিছু বলি তবে বলবো স্টপেজ হিসেবে বেশকিছু রেলওয়ে স্টেশন ব্যবহার করে থাকে এই ট্রেনটি। তবে যাত্রীদের লোকেশন অনুযায়ী ট্রেনটির লোকেশন সম্পর্কে যদি বলি তবে বলবো, এটি নিয়মিত ঢাকা টু পঞ্চগড় ও পঞ্চগড় টু ঢাকা রেলওয়ে স্টেশন লোকেশনে আসা-যাওয়া করে। সুতরাং যারা এই পথ দিয়ে আসা যাওয়া করেন তারা ট্রেন ছাড়ার নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশন হাজির হয়ে স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারেন।
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী
চলে এলাম আমাদের আজকের আর্টিকেলের মূল বিষয় অর্থ্যাৎ দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচীর ব্যাপারে। যারা দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে চান তারা নিচের পয়েন্টগুলিতে চোখ বুলাতে পারেন। আশা করি সঠিক তথ্য পেয়ে যাবেন।
- দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন সাধারণত ঢাকা টু পঞ্চগড়ের যাতায়াতের ক্ষেত্রে যাত্রা শুরু করে সকাল ০৮.০০ মিনিটে এবং যাত্রা শেষ করে বিকেল ০৫:৫৫ মিনিটের দিকে।
- আবার পঞ্চগড় টু ঢাকা যাতায়াতের ক্ষেত্রে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন যাত্রা শুরু করে সন্ধ্যা ০৬.১০ মিনিটে এবং এই যাত্রাটি শেষ হয় ০৮.০০ মিনিটে।
নোট: দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের বন্ধের দিন সম্পর্কে যারা কনফিউশনে আছেন তাদের উদ্দেশ্যে বলে রাখা ভালো এই ট্রেনটি কিন্তু সাপ্তাহিক কোনো বন্ধের দিন কিংবা অফ ডে কাটায় না।
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটমূল্য
যারা দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সাহায্যে যাতায়াত করতে চান তারা জেনে নিন দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটমূল্য কিংবা সিটের ভাড়া সম্পর্কে। আগেই বলেছি প্রায় কয়েকধরণের বা কয়েক ক্যাটাগরির সিট রয়েছে এই ট্রেনে। সুযোগ-সু্বিধার মতো এসব সিটের ভাড়ার মূল্যও আলাদা। প্রতিটি সিটের সঠিক মূল্য হলো:
- এসি বার্থ সিটের মূল্য ১৩৯০ টাকা
- শোভন সিটের মূল্য ৩৯০ টাকা
- শোভন চেয়ার সিটের মূল্য ৫৬৫ টাকা
- প্রথম সিটের মূল্য ৬২০ টাকা
- প্রথম বার্থ সিটের মূল্য ৯৩০ টাকা
- স্নিগ্ধা সিটের মূল্য ৭৭৫ টাকা
- সবশেষে এসি সিটের মূল্য ৯৩০ টাকা
যারা এসি সিট ছাড়া যাতায়াত করতে পারেন না তাদের জন্যে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সিটগুলি হতে পারে পারফেক্ট চয়েজ!
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সুবিধাসমূহ
এবার প্রশ্ন হলো আসলে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সার্ভিসটি আপনার কেনো নেওয়া উচিত? কেনোই বা প্রাইভেট কার কিংবা অন্যান্য ট্রেন ফেলে এই দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনকেই যাতায়াতের অপশন হিসেবে বেছে নেওয়া উচিত। কারণ:
- দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রীদের সুবিধার্থে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে
- বড় প্লেইসে খাবারের বগির ব্যবস্থা রয়েছে
- যাত্রীদের সুবিধার্থে পাবলিক টয়লেটের ব্যবস্থা রয়েছে
- গ্রাহক চাইলেই ট্রেনের প্রশস্ত প্রার্থনা কক্ষটি ব্যবহার করতে পারবে
- নিরাপত্তার দিক দিয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে
- অসুস্থতার ক্ষেত্রে ট্রেনটির প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থার সাহায্য নেওয়া যাবে
- সরাসরি ঘরে বসে অনলাইনের সাহায্যে দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিট কেনা যাবে (এসএমএস কোড নাম্বার 16318)
- সাশ্রয়ী দামে ভালোমানের সিট উপভোগের সুযোগ
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াতে সাবধানতা
যারা ট্রেনে নিয়মিত কিংবা অনিয়মিত যাতায়াত করেন তারা দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেন যাতায়াতে সাবধানতা সম্পর্কে সতর্ক থাকবেন। এক্ষেত্রে নিচের পয়েন্টগুলি মনে রাখতে পারেন:
- প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদে রাখুন
- মাস্ক ব্যবহার করুন
- টিকিট না কেটে ট্রেনের উঠে পড়ার মতো অপরাধ করবেন না
- ট্রেনের হাতল ধরার ক্ষেত্রে গ্লাভস ব্যবহার করুন
- ট্রেন ভ্রমণে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সাথে রাখুন
- ট্রেনের জানালার বাইরে হাত রাখা থেকে বিরত থাকুন
- সহযাত্রীদের সঙ্গে যতটাসম্ভব দৈহিক দূরত্ব বজায় রাখুন
ইতি কথা
দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সুবিধা, অসুবিধা, টিকিটমূল্য এবং দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী সহ অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে তো জানলেন! তবে আর দেরি কেনো! আজই দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের সাহায্য ট্যুর দেওয়ার প্ল্যানটি সেরে ফেলুন। সর্বোচ্চ সাবধানতা এবং ট্রেনে যাতায়াত করার কমন রুলসগুলি মেনে এই ট্রেনটিতে সময়মতো উঠে পড়ুন। আশা করি আপনার পরবর্তী ট্রেন জার্নি শতভাগ সফল হবে।