কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী | পরিচিতি | ইতিহাস | স্টপেজ | টিকিটমূল্য | সুবিধা
ঢাকা টু কুড়িগ্রাম আবার কুড়িগ্রাম টু ঢাকাতে যাদের নিযমিত চলাচল করার দরকার পড়ে তারা চাইলে ট্রেনের সাহায্য নিতে পারেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়বে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী সহ এ-সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য। যারা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন সম্পর্কে এখনো খুব একটা জানেন না কিংবা কখনোই ভ্রমণ করেননি তারা আজ আমাদের পুরো আর্টিকেলটির সাথে থাকুন। কথা দিলাম সকল তথ্য একসাথে পেয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিবো।
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী – Kurigram Express Train Schedule
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিচিতি
মূলত কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন হলো বাংলাদেশের সরকারি রেলওয়ে কতৃপক্ষের ৭৯৭/৭৯৮ নাম্বার ট্রেন। যা ঢাকা টু কুড়িগ্রাম এবং কুড়িগ্রাম টু ঢাকা রুটে যাত্রী পরিবহনের সার্ভিস দিয়ে থাকে। শুধু তাই নয়! যাদের নিয়মিত নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর ও রংপুর জেলায় আসা-যাওয়া করতে হয় তারা সময়সূচি দেখে এই ট্রেনটির সার্ভিস নিতে পারেন।
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সার্ভিস সম্পর্কে যদি বলি তবে বলবো এটি একটি আন্তঃনগর ট্রেন। সুতরাং এর সার্ভিসের সীমানাটাও আন্তঃনগরের মাঝেই সীমাবদ্ধ। ট্রেনটির যাত্রা ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় একেবারে কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে। নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী ও টিকেট, ভাড়া ২০২২
ট্রেনটি যাত্রী পরিবহন সার্ভিসের অংশ হিসেবে প্রতিদিন প্রায় ৪৫৪ কিলোমিটার বা ২৮২ মাইলের মতো পথ অতিক্রম করে থাকে। যা অতিক্রম করতে গড় হিসাবে সময় লাগে প্রায় ৯ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের মতো। অন্যান্য ট্রেনের মতো ট্রেনটি ভালো সার্ভিস দিলেও সপ্তাহে ১ দিন অর্থ্যাৎ প্রতি সপ্তাহের বুধবারে এর কার্যক্রম বন্ধ থাকে।
যারা ট্রেনটির আসন শ্রেণী সম্পর্কে বেশ কৌতূহলী তাদের উদ্দেশ্যে জানিয়ে রাখছি, এটির বগি শ্রেণীকে কিন্তু ৩ টি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়েছে। এগুলি হলো: তাপানুকুল স্লিপার, তাপানুকুল চেয়ার এবং শোভন চেয়ার। খাদ্য সুবিধা হিসেবে ট্রেনটির রয়েছে অন-বোর্ড ফুড সার্ভের সুবিধা এবং মালামাল রাখার জন্যে রয়েছে ওভারহেড রেক ব্যবহারের সুবিধা।
বর্তমানে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা বিভাগের রেলওয়ে কতৃপক্ষ। সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার কারণে কতৃপক্ষ এর স্টপেজ হিসেবে মোট ৮ টি স্টেশনকে সিলেক্ট করেছে। এসব নির্বাচিত স্টেশন সম্পর্কে জানতে আমাদের সাথেই থাকুন৷
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ইতিহাস
খুব বেশিদিন নয়! এই তো! গত ১৭ অক্টোবর ২০১৯ তারিখ থেকে সার্ভিস দেওয়া শুরু করেছে এই কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেন। হিসেব করলে দেখা যাবে এর বয়স হয়েছে মাত্র ২ বছর। বয়স কম হলেও বর্তমানে সুযোগ-সুবিধাসহ সবদিক দিয়ে ট্রেন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা কুড়াতে সক্ষম হয়েছে। বলে রাখা ভালো এই ট্রেনটি পূর্বে রংপুর এক্সপ্রেস ও লালমনি এক্সপ্রেসের সাথে রেক শেয়ার করে চলাচল করলেও বর্তমানে নিজস্ব রেক ব্যবহার করে সার্ভিস দিয়ে আসছে৷
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ
আগে বলেছি কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজ হিসেবে কতৃপক্ষ সর্বমোট ৮ টি স্টেশনকে সিলেক্ট করেছে। এগুলি হলো:
- নাটোর
- মাধনগর,নাটোর
- সান্তাহার জংশন
- জয়পুরহাট
- বদরগঞ্জ
- রংপুর
- ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন
- পার্বতীপুর জংশন
- কাউনিয়া জংশন
সুতরাং কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের ঢাকা টু কুড়িগ্রাম এবং কুড়িগ্রাম টু ঢাকা রুটের যাত্রাপথে যারা উপরের উল্লেখিত স্টপেজে নামতে চান তারা সাচ্ছন্দ্যে এই সুযোগ উপভোগ করতে পারেন।
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি
চলে এলাম আমাদের আজেকর এই আর্টিকেলের মূল বিষয় অর্থ্যাৎ কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কিত অংশে। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচী সম্পর্কে জানতে নিচের পয়েন্টগুলিতে ফোকাস করতে পারেন। আশা করি সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
- ঢাকা টু কুড়িগ্রাম যাত্রাকালে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২০ঃ৪৫ মিনিটে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে এবং কুড়িগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায় ০৬ঃ১৫ মিনিটে।
- অন্যদিকে কুড়িগ্রাম টু ঢাকা যাত্রাকালে এই ট্রেনটি একই দিনে ০৭ঃ১৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করে তা শেষ করে ১৭ঃ২৫ মিনিটে।
যারা ঢাকা টু কুড়িগ্রাম কিংবা কুড়িগ্রাম টু ঢাকা যাতায়াত করার ক্ষেত্রে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সার্ভিস নিতে চান তারা অবশ্যই নির্দিষ্ট সময়ের অন্তত ১০/১৫ মিনিট আগে স্টেশনে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটমূল্য
যারা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়তে চান তাদের অবশ্যই কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটমূল্য সম্পর্কে আইডিয়া থাকা উচিত। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটমূল্য সম্পর্কে জানতে নিচের পয়েন্টগুলিতে ফোকাস করুন:
- শোভন চেয়ার সিট কিনতে হলে আপনাকে গুনতে হবে ৫১০ টাকা
- এসি সিট যারা কিনতে চান তাদের ১০১০ টাকা খরচ করতে হবে
- কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের প্রতিটি এসি বার্থ সিটের মূল্য ১৫৭৫ টাকার মতো
- প্রথম সিট কেনার ক্ষেত্রে খরচ পড়বে ১০১৫ টাকা
এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, চাইলে দেশের যেকোনো কাউন্টার থেকে কিংবা অনলাইন ওয়েবসাইট বা এসএমএসের মাধ্যমে ঘরে বসেই কেনা যাবে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের যেকোনো ক্যাটাগরির টিকেট।
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সুবিধা
এবার আমরা একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াবো। যার উপর নির্ভর করবে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের মাধ্যমে যাতায়াত করার প্রতি আপনার আগ্রহ কতখানি! এবার আমরা জানবো কেনো চড়বেন কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে… সে-সম্পর্কে! রিকশা, বাস, সিএনজি ছেড়ে কেনোই বা আপনাকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সাহায্যে যাতায়াতের তাগাদা দিচ্ছি? জানতে হলে আমাদের সাথেই থাকুন। কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সুবিধাগুলি হলো:
- এসিতে থেকে যাতায়াত করার সুবিধা
- অন-বোর্ড সার্ভ করা খাবার উপভোগের সুবিধা
- সার্ভিস অনুযায়ী সাশ্রয়ী মূল্যে সিট কেনার সুযোগ
- অনলাইনে টিকিট কাটার সিস্টেম
- প্রায় ৮ টি স্টপেজে নামার সুযোগ
- দেশের সকল টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিট কাটার সুযোগ
- ফ্রিতে দৈনিক পত্রিকা কিংবা বিভিন্ন ম্যাগাজিন পড়ার সুযোগ
- বেশ মানসম্মত সিট উপভোগের সুযোগ
- ডাবল, সিঙ্গেল এবং কেবিন যেকোনো ধরণের সিট উপভোগ করার সুবিধা ইত্যাদি
আশা করি কেনো আপনার কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সার্ভিস নেওয়া উচিত সে-সম্পর্কে ধারণা পেয়ে গেছেন। এছাড়াও বাকি সুযোগ-সুবিধাগুলি নিয়ে সরাসরি এক্সপেরিমেন্ট করতে হলে আপনাকে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে একদিন উঠে পড়তে হবে।
ইতি কথা
কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি নিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি কেমন লেগেছে জানাতে ভুলবেন না কিন্তু! যারা একবারো এই ট্রেনে চড়েননি তারা সুযোগ বুঝে একবার হলেও উপভোগ করার চেষ্টা করবেন। হয়তো ছোট বেলার ট্রেন ছুটে যাওয়ার ছন্দময় ছড়ার কথা মনে পড়ে যাবে!